Thursday, July 28, 2016

Barbados vs Guyana Amazon Warriors Highlights, 25th Match, CPL 2016

Nic Maddinson 50 (41) vs GAW

Dwayne Smith 50 (34) vs GAW

5 Confusing Phrases



1. Hang up/hang out To “hang up” means to end a phone call (ফোন কল সমাপ্ত করা ); to “hang out” means to spend time relaxing, usually with a friend (কারোর সাথে বাইরে যাওয়া ).
Example: If he hangs up before I’m done talking, I will be too mad to hang out with him this weekend. (যদি সে আমার কথা বলা শেষ হওয়ার আগে ফোন কেটে দেয় , তাহলে আমি ওর সাথে বাইরে যাওয়ার বেলায় রাগ করবো )
2. Look up / look forward
To “look up” means to search and find information about something, usually in a dictionary or some sort of database. (কোনো জিনিসের সম্পর্কে তথ্য খোজা , সাধারণত কোনো শব্দকোষে না ডাটাবেসে .)
To “look forward” to something means to be excited about an event that will happen in the future. (ভবিষতের কোনো কাজ নিয়ে আশায় থাকা .)
Example: After looking up the plot of David Dhawan’s latest movie, I’m really looking forward to seeing it! (ডেভিড ধাওয়ানের নতুন সিনেমার প্লটটি দেখার পর , আমি সিনেমাটি দেখার জন্য উত্সুক আছি !)
3. Get into/get over
To “get into” means to become involved or interested in something. (কোনো কাজে অংশগ্রহন করা )
To “get over” can either mean the opposite of this — to lose interest in something — or it can also mean to recover from something, particularly an illness. (কোনো জিনিসের ওপরে উঠা - কোনো দুঃক্ষকে ভুলতে পারা )
Example: After I get over this flu, which is making me so weak, I’m going to get into dancing again. (এই ফ্লু যার কারণে আমি দুর্বল বোধ করছি , এটা থেকে সুস্থ হওয়ার পর আমি আবার নাচে যোগ দিব )
4. Throw out/throw up
To “throw up” means to vomit (বমি করা ), whereas to “throw out” means to dispose of something that is no longer being used. (কোনো জিনিসকে বাইরে ফেলে দেওয়া )
Example: If his baby throws up on the floor in my living room, I’ll have to throw away the rug that’s in there. (যদি তার বাচ্চা বমি করে আমার রুমের মেঝেতে বমি করে , তাহলে আমাকে রুমের কম্বলটি বাইরে ফেলে দিতে হবে )
5. Run into/run over
To “run into” someone can have the literal meaning of colliding with their body, but the phrase often means to meet or see someone unexpectedly. (কারোর সাথে সুযোগে দেখা করা )
To “run over” something means to drive a vehicle over that person or thing. (কোনো জিনিসের উপর দিয়ে চলে যাওয়া )
Example: I was so excited when I ran into my friend that I forgot to look both ways when crossing the street and a car almost ran me over!(যখন আমি হঠাৎ করে আমার বন্ধুকে দেখতে পাই তখন আমি আসে পাশে দেখতে ভুলে যাই আর একটি গাড়ি প্রায় আমার ওপর দিয়ে চলে গেছিল )
6. Put down/put off
  • To “put down” another person means to insult them or make them feel useless or stupid. (কাউকে অপমান করা )
    To “put off” something, usually some sort of event, means to postpone it. (কোনো জিনিসকে না বলে দেওয়া )
    Example: I put off going out to lunch with my friend because the last time I spoke with her, she kept putting me down. (আমি আমার বন্ধুর সাথে বাইরে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছি কেননা শেষবার যখন আমি তার সাথে কথা বলি তখন সে আমাকে অপমান করেছিল )
    7. Break into/break up To “break into” a place means to forcibly enter it, and is usually used with a place that you should not enter or to which access is usually restricted. (জোর করে কোথাও ঢুকে যাওয়া )
    To “break up” with someone means to end a relationship. (কারোর সাথে সম্পর্ক ভেঙ্গে দেওয়া )
    Example: If your girlfriend breaks into your house in the middle of the night uninvited, that’s probably a pretty good reason to break up with her! (যদি আপনার প্রেমিকা মাঝরাতে আপনাকে না বলে আপনার ঘরে ঢুকে যাই তাহলে এটা তার সাথে সম্পর্ক ভাঙ্গার ভালো কারণ হবে )

5 ways to say 'I don't know'



(আমি জানি না - বলার 5 টি ধরন)
1. I am not sure - আমি নিশ্চিত নই
2. I have no idea - আমার কোনো ধারণা নেই
3. Beats me! - আমি জানি না/আমি বুঝতে পারছি না!
4. I don't have a clue - আমার একদমই কোনো ধারণা নেই
5. Your guess is as good as mine! - আমিও জানি না!

Wednesday, July 27, 2016

10 Ways to say 'You're welcome'(যখন কেউ আপনাকে ধন্যবাদ বলছে, তখন আপনি এগুলো বলতে পারেন)


  • 1. You got it - আপনার যখন যা দরকার, আমি দিবো 2. Don’t mention it - এটা (ধন্যবাদ) বলার দরকার নেই
    3. No worries - কোন চিন্তা করো না
    4. Not a problem - কোনো সমস্যা না
    5. My pleasure - আমার ভালো লেগেছে
    6. It was nothing - এটা কিছুই না 7. I’m happy to help - সাহায্য করতে পারাই আমি খুশি
    8. Not at all - একদমই না
    9. Sure - নিশ্চয়
    10. Anytime - যে কোনো সময়

6 Ways to Start a Conversation



1. How’s it going? (সব কিছু কেমন চলছে ?) This is an informal way to say, “How are you?” (আপনি কেমন আছেন , বলার এটা লৌকিকতাবর্জিত পদ্ধতি )
2. Long time no see! (অনেক সময় হয়ে গেল আপনাকে দেখেছি ) This may look strange as a written sentence, but it’s a common thing people say when they haven’t seen each other in a long time. (যখন আপনি কারোর সাথে অনেক দিন পর কথা বলছেন তখন এটি বলা ঠিক হবে ) Another way to say this is(এটাকে বলার আরো একটি পদ্ধতি আছে ): I haven’t seen you in ages!(আমি আপনাকে অনেক দিন ধরে দেখছি না )

  • 1. How’s it going? (সব কিছু কেমন চলছে ?) This is an informal way to say, “How are you?” (আপনি কেমন আছেন , বলার এটা লৌকিকতাবর্জিত পদ্ধতি )
    2. Long time no see! (অনেক সময় হয়ে গেল আপনাকে দেখেছি ) This may look strange as a written sentence, but it’s a common thing people say when they haven’t seen each other in a long time. (যখন আপনি কারোর সাথে অনেক দিন পর কথা বলছেন তখন এটি বলা ঠিক হবে ) Another way to say this is(এটাকে বলার আরো একটি পদ্ধতি আছে ): I haven’t seen you in ages!(আমি আপনাকে অনেক দিন ধরে দেখছি 3.Pleased to meet you (আপনার সাথে দেখা করে ভালো লাগলো )
    This is another way to say “Nice to meet you.” It generally is more formal and can be used when you’re meeting a new person, like a new co-worker, for the first time. (যখন কারোর সাথে প্রথম বার দেখা করছেন তাহলে এটি বলতে পারেন .)
    4. Look who it is! (যখন কাউকে দেখে খুব খুশি হবেন ) In informal settings, this is a way to express excitement about seeing a friend.
    5. Good to see you (যখন কাউকে আবার দেখে আপনার ভালো লাগলো ) Just like it sounds, this phrase is used to say you’re happy to see someone again.
    6. Glad to put a name to a face (যখন কারোর সাথে ফোনে বা ই-মেইলে কথা বলার পর আপনি শেষ মেষ তার সাথে দেখা করছেন তাহলে তখন এটি বলতে পারেন ) Many times, we’ll talk to someone via email or over the phone before actually meeting them in person. This is what you can say when you’re finally meeting someone face-to-face after communicating with them in other ways for a while.

6 ways to say sorry

  • 1. I apologize for what I did. (আমি যা করেছি তার জন্য ক্ষমা চাইছি.)
    2. I am sorry, I did not intend to hurt your feelings. (ক্ষমা করবেন, আমি আপনার আবেগকে আঘাত করতে চাইনি.)
    3. I am sorry. I misinterpreted things, I hope everything is fine.(আমায় ক্ষমা করবেন. আমি জিনিসের ভুল মানে বের করেছি, আশা করছি এখন সব ঠিক আছে.)
    4. I am sorry if I hurt you in any way. (আমি যদি আপনাকে কোনো ভাবে আঘাত করে থাকি আমায় ক্ষমা করবেন.)
    5. I apologize for getting late, I was stuck in a jam. (দেরী করার জন্য আমি ক্ষমা চাইছি, আমি জামে পরে গেছিলাম.)
    6. My apologies for the delay in getting back to you. (ক্ষমা করবেন আপনাকে জবাব দিতে কিছুটা দেরী হয়ে গেল.)

Antonyms for 'Bold

  • Bold - (of a person, action, or idea) showing a willingness to take risks; confident and courageous. (সাহসী )
    1. Timid (ভীরু): easily frightened
    2. Unadventurous (যে সাহসী না ): not eager for new things.
    3. Shy (লাজুক): being reserved or having or showing nervousness in the company of other people.
    4. Bashful (সংকোচি ): hesitant to draw attention to oneself; shy.
    5. Nervous (অস্থির): someone who gets anxious easily

Idioms for busy



1. All hands on deck
Meaning: When there’s a lot of work to be done and everyone needs to be involved. (যখন কাজ অনেক বেশি থাকে এবং সবাইকে একত্রে কাজ করতে হয়)
2. Hive of activity
Meaning: A place where there are a lot of things happening and everyone is busy. (যেখানে অনেক কাজ হচ্ছে এবং সবাই ব্যস্ত। )
3. Rushed off your feet
Meaning: You are so busy that you don’t have time to stop. (যখন আপনি এতটাই ব্যস্ত থাকেন যে আপনার কাছে থামার সময় নেই .)
4. Work your fingers to the bone
Meaning: To work very hard or to be extremely hardworking (কড়া পরিশ্রম করা)
5. Roll up your sleeves
Meaning: Get ready for hard work (কড়া পরিশ্রমের জন্য তৈরী হওয়া)

Types of shapes



1. Square - A flat shape with four sides of equal length and four angles of 90 degree.
2. Rectangle - A plane figure with four straight sides and four right angles, especially one with unequal adjacent sides, in contrast to a square.
3. Rhombus - A quadrilateral all of whose sides have the same length.
4. Parallelogram - Parallelograms have 2 pairs of parallel sides.
5. Trapezium - Trapezoids US (Trapeziums UK) have one pair of parallel sides. Some trapezoids have a line of symmetry.
6. Kite - Kites have 2 pairs of equal sides which are adjacent to each other.
7. Pentagon - A plane figure with five straight sides and five angles.
8. Hexagon - A plane figure with six straight sides and angles.
9. Heptagon - A plane figure with seven straight sides and angles.
10. Octagon - A plane figure with eight straight sides and eight angles.
11. Nonagon - A plane figure with nine straight sides and nine angles.
12. Decagon - A plane figure with ten straight sides and angles.

মনের জটিল রোগ, সিজোফ্রেনিয়া!



১৯১১ সালে সুইডেনের মনোচিকিৎসক ব্লিউলার সিজোফ্রেনিয়া শব্দটি ব্যবহার করেছিলেন। সিজোফ্রেনিয়া একটি তীব্র মাত্রার জটিল মানসিক রোগ। সিজোফ্রেনিয়া শব্দটি এসেছে মূলতঃ গ্রীক ভাষা থেকে। এর প্রথম অংশটিকে বলা হয় ‘সাইজো’ বা ‘সিজো’, যার অর্থ ভাঙ্গা বা টুকরো! দ্বিতীয় অংশটি হল ‘ফ্রেনিয়া’ বা মন! অর্থাৎ, পুরোটা দাঁড় করালে হয় ভাঙ্গা মন বা টুকরো টুকরো মন!
অনেকেরই এ রোগটি নিয়ে ভ্রান্ত ধারণা রয়েছে। মানব মস্তিষ্কে নিওরন বা স্নায়ুকোষের পরিমাণ অসংখ্য। এটি সংখ্যায় বিলিয়ন বিলিয়ন হতে পারে। প্রত্যেক নিওরনের শাখা প্রশাখা থাকে, যার সাহায্যে সে অন্য স্নায়ু বা মাংশপেশী বা অন্য কোন গ্রন্থি থেকে উদ্দীপনা গ্রহণ করতে পারে। এই নিওরন বা স্নায়ুকোষের শেষাংশ বা টার্মিনাল থেকে কিছু রাসায়নিক পদার্থ নিঃসরিত হয়। এগুলোকে বলে নিওরোট্রান্সমিটার। এগুলির সাহায্যেই নানা ধরণের উদ্দীপনা স্নায়ুকোষ থেকে স্নায়ুকোষে পরিবাহিত হয়। এভাবে আমরা উদ্দীপনা লাভ করে থাকি। সিজোফ্রেনিয়া রোগটিতে এই যোগাযোগ ব্যবস্থা তথা মস্তিষ্কের স্বাভাবিক কার্যকলাপ বিঘ্নিত হয়!
সিজোফ্রেনিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তির অনুভূতি, চেতনা, কাজকর্ম বাস্তবের সাথে সঙ্গতিহীন বা খাপছাড়া হয়। এরা নিজের মত করে সবকিছু ভাবে, নিজের একটা ভূবন তৈরী করে নেয় যেটি বাস্তবের চিন্তাচেতনার বাইরে। এ রোগটিতে মস্তিষ্কের রসায়ন পরিবর্তিত হয়ে যায়। এদের বোধশক্তি কাজ করে না বা কমে যায়, যা তাদের আচরণকে ভূল পথে পরিচালিত করে। মাঝে মাঝে এদের কার্যকলাপ ভয়ংকর রূপ ধারণ করে। রোগটি এত ধীরগতিতে অগ্রসর হয় যে, অনেক সময় তাদের পরিবার বুঝতেই পারেন না। এটি বোঝা যায়, শুরু বা প্রকাশ হয় সাধারণতঃ ১৮ বছর বয়স থেকে। তাদেরকে তাদের আচরণের জন্য পরিবারের সদস্যরা ভয় পান বা অস্বস্তিতে ভোগেন।
উপসর্গ:
আক্রান্ত রোগীদের ভেতর সাধারণতঃ হ্যালুসিনেশন, অলীক প্রত্যক্ষণ, সন্দেহ প্রবণতা, গায়েবী আওয়াজ শোনা, ডিলিওশান বা ভ্রান্ত বিশ্বাস, আচরণের নাটকীয় পরিবর্তন, অনীহায় ভোগা, অস্থিরতা, অবসাদগ্রস্থতা, বিষন্নতা, স্বাভাবিক কাজকর্ম চালাতে ব্যর্থ হওয়ার উপসর্গগুলো দেখা যায়। রোগী সব সময় ভাবে, সবাই তার শত্রু, সবাই তাকে নিয়ে ষড়যন্ত্র করছে! এদের মনে নিজস্ব কিছু দৃষ্টিভঙ্গী পাকাপোক্ত আসন গেড়ে বসে, যেমন ধর্মীয়, পারিবারিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক বা সাংষ্কৃতিক। অনেক সময় রোগী গোসল করা বা নখ কাটা অর্থাৎ নিজের পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার প্রতি উদাসীন হয়ে পড়েন। অসামাজিকতা বা সমাজ থেকে বিচ্যুত হন, নিজের মত করে একা একা থাকা চলতে থাকে। এদের অস্বাভাবিক বিশ্বাস থাকে যে, এদের নিয়ে সবাই সমালোচনায় লিপ্ত, যদিও অন্যরা নিজেদের মধ্যে অন্য বিষয়বস্তু নিয়ে আলোচনা করছে। তাদের পেছনে পুলিশ, গোয়েন্দা কেউ লাগিয়ে দিয়েছে, এদের মনে ভ্রান্ত ধারণা এত বেশী থাকে যে এদেরকে প্যারানয়েড বা সন্দেহ বাতিকগ্রস্থ বলা হয়! এরা ভাবে, এদের মনের কথা, চিন্তা চেতনা অন্যরা কি ভাবে যেন জেনে ফেলছে! এরা ভাবে, কেউ তার ভাল দেখতে পারে না! মাঝে মাঝে পর্যাপ্ত ঘুম না হওয়ায় রোগীর এক ধরণের দুঃখবোধ তৈরি হতে পারে।
ক্রনিক বা দীর্ঘমেয়াদি সিজোফ্রেনিয়া অনেক ক্ষেত্রে তীব্র মাত্রায় দেখা যায়। এদের আবেগ ভোঁতা হয়ে যায়। এ রোগটির সাথে আত্মহত্যার গুরুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। ডিলিওশান বা ভ্রান্ত বিশ্বাসের জন্যই এদের ভেতর সুইসাইডাল টেন্ডেন্সি বা আত্মহত্যা প্রবণতা তৈরী হয়! অনেক সময় এই প্রবণতাটির লক্ষণগুলো রোগীর কাছের মানুষেরা একটু লক্ষ্য করলেই বুঝতে পারবেনঃ
১। রোগী যদি সব সময় সুইসাইডের কথা বলে,
২। যদি কখনো সুইসাইডের প্ল্যানের কথা জানায়,
৩। রোগীর যদি ভবিষ্যৎ সম্পর্কে আশাহত অনুভূতি থাকে,
৪। নিজের সম্পর্কে যদি সব সময় হীনমন্যতা থাকে,
৫। যদি কোন অলীক প্রত্যক্ষণ দেখতে পায়, যা তাকে আত্মহত্যা করতে উৎসাহিত করে।
কারণ:
এ রোগটি প্রধাণতঃ বংশগত বা জেনেটিক্যাল। বংশের কারো না কারো এটি থাকলে কোন না কোন জেনারেশনে প্রকট অথবা প্রচ্ছন্নভাবে প্রকাশিত হতে পারে কারো কারো ক্ষেত্রে!
সতর্কতা:
এদের সাথে নরমভাবে কথা বলুন। এদেরকে কখনই উত্তেজিত করা যাবে না, কেননা তা অনেক সময় ভয়ংকর বিপদ বয়ে আনতে পারে। সব সময় এদের সাথে ইতিবাচকভাবে কথা বলুন, অহেতুক মানসিক চাপ বা দায়িত্ব এরা নিতে পারে না, এটি বোঝার চেষ্টা করুন। এদের প্রতি সহনশীল আচরণ করুন, যত্নশীল হোন। সবসময় মনে রাখবেন, যে কারো ক্ষেত্রে, যখন তখন শরীরের মত মনও অসুস্থ হতে পারে!
চিকিৎসা:
কোন সংকোচ বা দ্বিধা ছাড়াই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব মনোচিকিৎসক বা সাইকিয়াট্রিস্ট এবং কাউন্সেলর বা সাইকোথেরাপিস্টের শরণাপন্ন হোন। এ রোগটিকে মেডিসিন ও কাউন্সেলিংএর মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। রোগী এতে অনেকটাই সুস্থ হয়ে উঠেন এবং স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারেন। রোগটি নিয়ন্ত্রণের পর রোগী যেন সামাজিক জীবনে চলমান থাকতে পারেন, কারিগরী বা বৃত্তিমূলক জীবিকা অবলম্বন করতে পারেন সে দিকে কাউন্সেলর উৎসাহিত করবেন। অন্তর্দৃষ্টিমূলক সাইকোথেরাপি এক্ষেত্রে মেডিসিনের সাথে ভাল কাজ করে। এই বিশেষ থেরাপি রোগীকে তার নিজস্ব জগত থেকে বাস্তব জগতে ফিরিয়ে এনে সেখানে কিভাবে খাপ খাইয়ে চলবেন সেটিতে সাহায্য করতে পারে। এছাড়া সমর্থনমূলক থেরাপি এক্ষেত্রে রোগীর সামাজিকীকরণ ও অর্থনৈতিক পুনর্বাসনে কাজে লাগে।
তাই আর লজ্জা নয়, লুকোচুরি বা দ্বিধা নয়। সিজোফ্রেনিয়ায় আক্রান্তদেরও রয়েছে সমাজে, পরিবারে সুস্থভাবে বাঁচার অধিকার! এ রোগটি সম্পর্কে জানুন ও সচেতন হোন! আপনার এই সচেতনতাই বাঁচিয়ে দেবে একটি প্রাণ, একটি পরিবার ও আপনাকে! 

সবার উপরে মানুষ সত্য, তাহার উপরে নাই!



ছোটবেলায় এইম ইন লাইফ বা জীবনের লক্ষ্য হিসাবে কত এইমের কথাই না মনে মনে ভাবতাম! আবার পরীক্ষার খাতায় সে সব লিখতামও বটে! মাঝে মাঝে রাগও লাগতো, হতে চাই কি আর লিখতে হচ্ছে কি! রচনা বইয়ে পড়তে হয়েছে গৎ বাঁধা কিছু পেশা! পড়ে হোঁচট খেতাম, কিন্তু কখনও জীবন থেকে বিচ্যুত হতে শিখিনি!
অথচ.. এখনকার বাচ্চাদের এইম ইন লাইফ কি?!!! তারা নিজেরাই কনফিউজড! যেটি নেই কোন রচনা বইয়ে, নেই নিজের কোন চিন্তা চেতনাতেও! ভাবতেই কষ্ট হয়! তবে কি তাদের এইম শুধু অন্যের অন্যায় চিন্তাচেতনায় নিজেদেরকে সঁপে দেয়া এবং তা নিজের ভেতরে ধারণ করে নেগেটিভিটির দিকে এগিয়ে যাওয়া? এবং তা তাদের বিচারে সঠিক বলে আত্মস্থ করা???
তাইতো তারা নিজের সোনালী শৈশবকে হারিয়ে ফেলে কোন বন্দুকের ট্রিগারে! কিংবা রক্তক্ষয়ী কোন সংঘর্ষে! কিংবা মাদকের কোন আখড়ায়!
এই ব্রেইন ওয়াশের হোলি খেলার শেষ কোথায়?! আর নয় রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ! হিংসা বিদ্বেষ! আর নয় নেতিবাচক ব্রেইন ওয়াশের খেলা!
বাবা, মা, পরিবার ও মানুষ গড়ার কারিগরেরা এখনই সজাগ হোন! প্রিয় সন্তানটিকে বুক ভরা ভালোবাসা দিয়ে আগলে রাখুন ও পর্যাপ্ত সময় দিন, তাদের নিরাপদে রাখুন!! স্বাধীনতার নামে একেবারে ছেড়ে না দিয়ে স্বাধীনতার মর্ম কথা, স্বাধীনতা রক্ষা করা শেখান!! তথাকথিত পুঁথিগত শিক্ষা নয়, সত্যিকারের মানবিক বোধসম্পন্ন মানুষ হওয়ার শিক্ষা দিন! ইতিবাচক স্বপ্ন দেখাতে সাহায্য করুন! কেননা...........!!!
'সবার উপরে মানুষ সত্য তাহার উপরে নাই'!!!! 

সন্তানের আচরণ নিয়ে ভাবছেন?!



অনেক বাবা-মায়েরই তাদের বাচ্চাদের সম্পর্কে অভিযোগের অন্ত নেই! বাচ্চা ঠিকভাবে পড়াশুনা করছে না, ঠিকভাবে খাচ্ছে না, কথা শুনছে না, কথা বলছে না, স্কুলে যেতে চাইছে না, মিথ্যা কথা বলছে, অতিরিক্ত রাগ বা মেজাজ দেখাচ্ছে, পরিবারের অন্য সদস্যের সাথে মারামারি করছে, এমনকি অনেক সন্তান চুরিও করছে! তখন উনারা বাচ্চাকে নিয়ে আর আশার আলো দেখতে পান না!
দেখুন, প্রতিটি বয়সেরই ভিন্ন ভিন্ন আবেদন রয়েছে। একটি শিশুর জন্ম হয় একটি পরিবারে। তার প্রথম লার্নিং বা শিক্ষণটাই হয় তার পরিবার থেকে। মনে রাখবেন, শিশুরা তাই শেখে যা তারা দেখে। ওদের অবজারভেশন পাওয়ার ও অনুভূতি তীক্ষ্ণ!
একটি বাচ্চার তিনটি পরিবেশ রয়েছে, যার মাধ্যমে সে কোন কিছু শেখে। যেমন প্রথমতঃ তার বাড়ী বা ঘর, যে ঘরে তার বাবা, মা, ভাই, বোন বা আপনজনেরা থাকেন। দ্বিতীয়তঃ তার স্কুল! যেখানে সে পড়াশুনা শেখে। তৃতীয়তঃ তার বন্ধু-বান্ধব বা খেলার সাথী, আত্মীয়-স্বজন।
শিশু পরিচালনার ক্ষেত্রে একেক পরিবার একেক ধরণের পলিসি এপ্লাই করে থাকেন। এ ক্ষেত্রে বাবা-মার আচরণকে কয়েকটি দৃষ্টিকোণ থেকে বিচার করলে বোঝা যায়। কোন কোন পরিবার তার সন্তানটির ক্ষেত্রে রিজেকশন বা প্রত্যাখ্যান পন্থা অবলম্বন করে থাকেন। সেটিকে আমরা রিজেকটিভ ফ্যামিলি বলতে পারি। আবার কোন কোন পরিবার সন্তানটির ক্ষেত্রে অতি রক্ষণশীল মনোভাব পোষণ করে থাকেন! এটিকে আমরা ওভার প্রোটেকটিভ পরিবার বলতে পারি। আবার কিছু কিছু পিতা মাতা খুবই ডমিনেটিং বা স্বৈরাচারী প্রকৃতির হয়ে থাকেন, এটিকে ডমিনেটিং ফ্যামিলি বলতে পারি! আরেক ধরণের পরিবার রয়েছে যেখানে সবাই মিলে মিশে থাকেন, এটিকে হারমনিয়াস এন্ড ওয়েল এডজাস্টেড ফ্যামিলি বলে থাকি।
এটিকে আর একটু সহজভাবে বললে বোঝায়, যেমন শিশুকে অবহেলা করা বা নেগলেক্ট করা, তার প্রতি একনায়কত্ব ভাব বা ডিকটেটরিয়াল পলিসি, আক্রমণাত্মক মনোভাব বা হস্টিলিটি! আবার রিজেকশনটা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ দুইই হতে পারে। ওভার প্রোটেকটিভ বা অতি রক্ষণশীল পরিবার সব সময় সন্তানকে আগলে রাখতে চান। শিশুর মতামতের তোয়াক্কা করেন না।
এখন আসি.. অনেকে আমরা বাচ্চার সামনেই ঝগড়া বিবাদে লিপ্ত হচ্ছি, বাচ্চার সামনেই কারো সমালোচনা করছি, মিথ্যা কথা বলছি, অন্যের সাথে খারাপ ব্যবহার করছি! আবার অন্য সময়ে বাচ্চাকে অহেতুক অন্যের সাথে তুলনা করছি, বাচ্চাকে কোন কাজের জন্য দোষারোপ করছি, তার সব কাজেই আমরা আমাদের মতামত, আদর্শ চাপিয়ে দিচ্ছি! মারধোর, বকাঝকা, অতিমাত্রায় সন্তানের প্রতি ইমোশনাল ইনভল্বমেন্টে জড়িত হচ্ছি প্রতিনিয়তই। এতে আপনার বাচ্চাটির এক ধরণের ইনসিকিওরিটি বা নিরাপত্তাহীনতা, হীনমন্যতা, রাগ, ক্ষোভ, হতাশা, পরনির্ভরতা তৈরী হবে এবং একটা সময়ে তার স্কুল, লেখাপড়া ও অন্যান্য সবকিছুই থমকে যেতে পারে! অনেক বাচ্চার দাঁত দিয়ে নখ কাটা, আংগুল চোষা এবং ধীরে ধীরে পরিবার ও নিজের প্রতি অনীহা, আক্রমণাত্মক মনোভাব, লেখাপড়া, খাওয়া দাওয়ায় অনিয়মিত হওয়া, বিশৃংখল জীবন যাপন, এডজাস্টমেন্ট প্রবলেম, অমনোযোগীতা এবং বিভিন্ন ধরণের অপরাধসহ বিভিন্ন আচরণগত সমস্যা দেখা দেয়। এসব সহ নানা ধরণের মানসিক রোগ বাসা বাঁধতে পারে।
প্রতিটি বাবা-মা তাঁদের সন্তানকে ভালবাসেন, এটি অনস্বীকার্য। কিন্ত নিজের অজান্তে ছোট শিশুটিকে আমরা আমাদের মত করে চালাতে চাই, কখনও মনে করি না তারও একটি পৃথিবী রয়েছে। তারও চাওয়া পাওয়া, ইচ্ছা অনিচ্ছা রয়েছে। সেও মানুষ! কিন্তু মানুষের ক্ষুদ্র সংস্করণ নয়! তাকে ইতিবাচক চিন্তা করতে সাহায্য করুন, তাকে তার নিজের কাজ নিজে করতে শেখান, তাকে কথার মাধ্যমে পুরষ্কৃত করুন, তাকে প্রশংসা করুন, বিশ্বাস করুন, এমনকি তার যে কাজটি আপনি পছন্দ করছেন না সেটি পজিটিভ ওয়েতে নিগেটিভ করুন এবং তাকে বুঝতে দিন আপনি তার আচরণে কষ্ট পেয়েছেন! আপনি তার বন্ধু হতে চেষ্টা করুন, তার কোন নিগেটিভ একটিভিটি চোখে পড়লে তার কারণ খোঁজার চেষ্টা করুন! কারণ পেলে সমাধানও সম্ভব। সর্বোপরি সে আপনার জীবনের গুরুত্বপুর্ণ একটি অধ্যায়, ব্যাপারটি তার সঙ্গে শেয়ার করুন!
বাচ্চাকে বয়স অনুযায়ী খেলাধুলা করার সুযোগ দিন, নিজেও তাদের সাথে খেলুন! কেননা, খেলার মধ্য দিয়ে সে নিয়মানুবর্তিতা, দলীয় মনোভাব, বুদ্ধিবৃত্তি ও খাপ খাওয়ানোর অভিজ্ঞতা অর্জন করে। সাইসাথে তার বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের মুভমেন্টের ফলে পেশীশক্তি ও শারিরীক সক্ষমতা তৈরী হয়। শিশুকে প্রশ্ন করুন বা তার প্রশ্নের উত্তর দিন, কথার মধ্য দিয়ে শিশু সামাজিক হতে শেখে।
সন্তানের মনের ভেতর ঢুকুন, জানতে চেষ্টা করুন তার পৃথিবী সম্পর্কে! জেনে রাখুন, আপনার ছোট একটি আচরণ তার পৃথিবীটাকে একদিকে আলোকিত, আবার অন্ধকারও করে দিতে পারে নিমেষেই! 

Friday, July 22, 2016

আপনি কি কাউন্সেলিং দিচ্ছেন? নাকি সাজেশন?! জেনে নিন!


অনেককেই বলতে শুনি, "আমিও তো কাউন্সেলিং দেই! কাউন্সেলিং এ ভিজিট আবার কি!" তখন কিছুটা বিচলিত ও বিব্রত হই, থমকে যাই! কি বলবো, কাকে বলবো? কাদেরকে বলবো?! সত্যিই বিচিত্র আমরা!
আজ আপনাদের জন্যই আবার লিখতে বসলাম! .... 
দেখুন, সাজেশন, এডভাইজ এবং কাউন্সেলিং এক জিনিস নয়! সাজেশন বা এডভাইজ হল অন্যের অভিজ্ঞতার আলোকে আরেক জনকে চলার কথা বলা। বা অন্যের মতাদর্শকে নর্মস হিসাবে নিয়ে জীবনের সমস্যার সমাধান দেয়ার চেষ্টা।
কিন্তু কাউন্সেলিং হচ্ছে এক ধরনের থেরাপী! যেখানে প্রথমে Rapport build up করতে হয় ও সেই সাথে প্রফেশনালিজম মানে টাইম এবং মানির একটা ব্যাপার থাকতেই হয়। কাউন্সেলর কখনই নিজের মতামত চাপিয়ে দিতে পারবেন না। বিভিন্ন থেরাপী যেমন হতাশা, এগ্রেশনের জন্য কগনেটিভ বিহেভিয়রাল থেরাপী, আবার বর্ডার লাইন পার্সোনালিটির জন্য ডায়ালেকটিয়াল বিহেভিয়রাল থেরাপী, ইমোশান নিয়ে ডিস্টার্বড বা কোন ফিজিক্যাল পেশান্টের ক্ষেত্রে সাপোর্টিভ সাইকোথেরাপী ইত্যাদি এপ্লাই করে থাকেন, যেটি তিনি তার কথার মাধ্যমে করেন। আবার ক্লায়েন্টকে তিনি অনেকগুলি দিক নির্দেশনার মাধ্যমে সাহায্যও করেন, ক্লায়েন্টের অজান্তেই। কাউন্সেলর কখনই কোন কিছুর সমাধান দেন না, তিনি অনেকগুলি টেকনিক বা থেরাপী এপ্লাই করে ক্লায়েন্টকে সেখান থেকে যে কোন একটি বেছে নিতে সাহায্য করেন। এর মাঝে তিনি ক্লায়েন্টের অজান্তেই ক্লায়েন্টের পারসোনালিটি, এনভায়রনমেন্ট, পাস্ট হিস্ট্রি, বডি ল্যাংগুয়েজ বিভিন্ন ভাবে অবজার্ভ করেই থেরাপীগুলি এপ্লাই করে থাকেন। কিছু কিছু থেরাপীর অনেক গুলি সেশনও দিতে হয়।
একটা কথা মনে রাখা দরকার, কাউন্সেলর শ্যুড বি নিউট্রাল এবং তিনি ও তার ক্লায়েন্ট একে অপরের উপর বিশ্বস্তও থাকবেন। কাউন্সেলরকে এ বিষয়ে পড়াশুনা, কেইস স্টাডী, ইন্টার্নশীপ করার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। এগুলি না করে কাউন্সেলিং হয় না। কারণ আপনাকে সেইসাথে বিভিন্ন মানসিক রোগ গুলি ফাইন্ড আউট করার দক্ষতাও অর্জন করতে হবে।
যেমন, কেউ হয়তবা হতাশা বা রাগ নিয়ে আপনার কাছে আসলো! এখন তার এংগার ম্যানেজমেন্ট এর জন্য আপনি কিছু টাস্ক দিয়ে তার রাগটা থেকে তাকে বের করে আনবেন! সে ক্ষেত্রে তার কারণ গুলি ফাইন্ড আউট করতে হবে, তার পাস্ট হিস্ট্রি লাগবে, তার কাছের মানুষদের সাথে কথা বলতে হবে, তার পার্সোনালিটি ডায়াগনোসিস করতে হবে। এরপর দেখতে হবে এটি কোন পর্যায়ে আছে! কাউন্সেলর সিম্পটম শুনে সেশনের মাধ্যমেই সেটা বুঝতে পারবেন, এটি স্টার্টিং, ক্রনিক নাকি ট্রমাটিক পর্যায়ে আছে। এই সিম্পল একটি উপসর্গ 'রাগ বা হতাশা' কিন্তু মোটেও সিম্পল নয়! এটি বিভিন্ন রোগের কারণও হতে পারে। যেমনঃ জ্বর কোন রোগ নয়! এটি কোন রোগের বা কোন কিছুর ইনফেকশনের লক্ষণ মাত্র!
ঠিক এ রকমই সিজোফ্রেনিয়া, সাইকোসিস, বাইপোলার ডিসঅর্ডার, বর্ডারলাইন এর মত ভয়ংকর রোগ হলেও রাগ বা হতাশা লক্ষণ হিসেবে আসতে পারে! আবার জেনিটিক্যালিও এফেক্ট পড়তে পারে, সেই ক্ষেত্রে আপনাকে এ জিনিসগুলি বুঝতে হবে। আবার যদি রোগটা প্যাথলজিক্যাল পর্যায়ে চলে যায় সে ক্ষেত্রে প্যাথলজিক্যাল হেল্প মানে মেডিসিন দরকার! এ ক্ষেত্রে শুধু কাউন্সেলিং এ হবেনা, সাথে মেডিসিনও লাগবে। তার মানে এ বিষয়ে দক্ষতা না থাকলে হতাশা বা এংগার ম্যানেজমেন্টের হোম টাস্ক কিভাবে দিবেন?!
কাউন্সেলিং বা সাইকোথেরাপী সম্পূর্ণভাবে একটি টেকনিক্যাল বিষয়। যেমন ডাক্তারী, ইঞ্জিনিয়ারিং বা অন্যান্য বিষয়গুলোর মত। যেমন, চাইল্ড, এডোলেসেন্ট, কাপল্, ফ্যামিলি, এডিকশন, রাগ, হতাশা, দন্দ্ব, ইত্যাদি এগুলোর একেকটির জন্য একেক ধরণের সাইকোথেরাপী এপ্লাই করা হয়। শিশুদের যেমন প্লে থেরাপী দেয়া হয়। কাপলদের সেই থেরাপী দেয়া হয় না। কাউন্সেলর সিদ্ধান্ত নেবেন, কার জন্য কোন থেরাপীটি প্রযোজ্য।
ভাই শুনে রাখেন!...
সাধারনভাবে আপনি যেটি দিবেন বা দিচ্ছেন বা দেয়ার চেষ্টা করছেন, সেটি কাউন্সেলিং নয়! সেটি এডভাইজ বা সাজেশন ছাড়া আর কিছুই নয়! 
যত খুশি তত সাজেশন বা এডভাইজ দেন! কিন্তু কাউন্সেলিং দেন অনুগ্রহ করে এটা বলবেন না!!

ইন্টারনেট ও স্মার্টফোন আসক্তি!!!



অনেকেই প্রতিদিন নিজের অজান্তেই অনেক সময় ব্যয় করে থাকেন ইন্টারনেটে! আপনি জেনে অবাক হবেন এটিও এক ধরনের এডিকশন, যেটিকে ইন্টারনেট এডিকশন ডিসঅর্ডার বা IAD বলা হয়। এই আইএডিকে কয়েকটা ভাগে ভাগ করা যায়। যেমন: গেইমিং, সোসাল নেটওয়ার্কিং, ব্লগিং, ইমেইল, ইন্টারনেট পর্নোগ্রাফি, ইন্টারনেট শপিং, ইত্যাদি। এখন আসা যাক এই আসক্তির পেছনে কি কি লক্ষণ থাকতে পারে..
১. মানসিক লক্ষণ: নিজেকে দোষী ভাবা, ডিপ্রেশন বা হতাশা, উদ্বিগ্নতা, অসততা, কাজের সিডিউল বজায়ে রাখতে না পারা, সময়ের ব্যাপারে উপলব্ধি লোপ পাওয়া, একাকীত্ব, আত্মপক্ষ সমর্থনে আক্রমণাত্মক মনোভাব, কাজ এড়িয়ে চলা
২. শারীরিক লক্ষণ: মাথাব্যথা, ওজন বাড়া বা কমা, ঘুমে ব্যাঘাত ঘটা, অস্পষ্ট দৃষ্টি, দেখতে কষ্ট হওয়া
এবার আসি আসক্তির স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদী প্রভাবের ব্যাপারে।
১. স্বল্পমেয়াদী: কাজ অসমাপ্ত রাখা, ভুলে যাওয়া, দায়িত্ব নিতে না পারা
২. দীর্ঘমেয়াদী: ব্যাকপেইন, ঘাড়ব্যথা, Carpal Tunnel Syndrome (নার্ভের ক্ষতি থেকে হাতের আঙুলে তীব্র ব্যথা), একটানা তাকিয়ে থাকা থেকে হওয়া দৃষ্টির সমস্যা
এইসব আসক্তির জন্য জীবনযাপনের মান অনেকক্ষেত্রেই ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে থাকে। পারস্পরিক স্নেহ ভালবাসা হ্রাস, ভুল বোঝাবুঝি সৃষ্টি এমনকি ডিভোর্স পর্যন্ত গড়ায়। এছাড়াও সব সময় স্মার্টফোন বা পিসির মনিটরে তাকিয়ে থাকতে থাকতে আমাদের বিভিন্ন ধরণের নার্ভও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ব্যক্তি হাইপার একটিভ হয়ে পড়ে সব সময়, যা তার নিজের, পারিবারিক, সামাজিক সব ধরণের ক্ষেত্রেই নেগেটিভ প্রতিফলন ঘটায়!
এখন জেনে নেই, এটিকে আইডেন্টিফাই করবেন কি ভাবে?
১. সাইলেন্স বা চুপ হয়ে যাওয়া: বাস্তব জগতের সামাজিকতা থেকে দূরে সরে যাওয়া, যখন অফলাইন হবেন তার কিছুক্ষণ পরেই অনলাইন হতে ইচ্ছে করা
২. মুড মডিফিকেশন: টলারেন্স বা অনলাইনে ধীরে ধীরে বেশীক্ষণ ধরে থাকার প্রবণতা বাড়া
৩. উইথড্রয়াল সিম্পটমস: যখন অফলাইন থাকবেন, তখন একধরণের আনপ্লেযেন্ট বা নিরানন্দ ভাব হবে, মনের ভেতর শেকিনেস, মুডিনেস, বিরক্তি ভাবের উদ্রেক হবে।
৪. কনফ্লিক্ট: বিভিন্ন ধরণের কনফ্লিক্টের সৃষ্টি হবে, যেমন: জব বা চাকুরীর ক্ষেত্রে, সামাজিক জীবন রক্ষার ক্ষেত্রে, বা নিজের সাথেও কনফ্লিক্ট হতে পারে।
সাধারণত: সাইবার সেক্স, সাইবার রিলেশন, কম্পিউটার গেইমিং এগুলি ইয়াং এইজে হয়ে থাকে। তবে অনেকের আবার ব্যতিক্রমও হয়! কিছু অনলাইন গেইমিং, শপিং যে কোন সময় ইন্টারনেটে করা যায় বলে যখন তখন অনলাইন হতে ইচ্ছে করে। এটি মুলত: ব্যক্তিকে একধরনের ফিলিংস এনে দেয়, যেটিতে সে নিজেকে ইন্ডিপেন্ডেন্ট ভাবে এবং ব্যক্তি এক্সাইটেড থাকে, যা পরবর্তীতে তার অভ্যাসে পরিণত হয় মনের অজান্তেই!
মনোবিজ্ঞানীরা বিভিন্ন স্কেলে এই আসক্তির মাত্রা নির্ণয় করতে পারেন। যেমন: চেইন ইন্টারনেট এডিকশন স্কেল, কমপালসিভ ইন্টারনেট ইউজ স্কেল, প্রব্লেমেটিক এন্ড রিস্কি ইন্টারনেট ইউজ স্কেল, ইত্যাদি।
এখন আসি এই আসক্তি থেকে কি ভাবে ফিরে আসা যায়।
১. বিভিন্ন ধরণের সফ্টওয়্যার দিয়ে ইন্টারনেট ব্রাউজিং কন্ট্রোল করা অর্থাৎ, কনটেন্ট কনট্রোল সফটওয়্যার ব্যবহার
২. কাউন্সেলিং
৩. কগনেটিভ বিহেভিয়রাল থ্যেরাপী
৪. আত্ম-সচেতনতা ও আত্ম-নিয়ন্ত্রণ
এবারে স্মার্টফোন এডিকশন বিষয়ে কিছু কথা!
অনেকেই সাধারনতঃ Nomophobia রোগে (মোবাইল ফোন ছাড়া থাকার আতংক) আক্রান্ত হন। অযথা ফোন নিয়ে নাড়াচাড়া, অপশন বা নেটওয়ার্ক চেকিং, অনলাইন হওয়া চাই! বুঝতেই পারেন না এটিও যে এক ধরণের আসক্তি। বিভিন্ন ধরণের কারণও রয়েছে এটির জন্য। যেমন: যদি ব্যক্তি তার পরিবার ও বন্ধুবান্ধবদের সাথে আইসোলেশনে (একাকীত্ব) থাকেন বহুদিন, যদি তিনি ভাবেন তার জীবনে কেউ নেই, যদি মনের ভেতর কাউকে বা কোন কিছু হারাবার ভয় জন্মে, কখনও অতিমাত্রায় এনজাইটি বা প্যানিক (উদ্বেগ-আতঙ্ক) ফিল করেন।
স্মার্ট ফোন আসক্তির কিছু প্রভাব এবারে দেখা যাক:
ভার্চুয়াল রিলেশনসিপ: এটির মাধ্যমে সোসাল নেটওয়ার্কিং এডিকশন হতে পারে। ডেটিং অ্যাপস, টেক্সটিং, মেসেজিং ইত্যাদির মাধ্যমে বাস্তব সম্পর্ক বাদ হয়ে ভার্চুয়াল সম্পর্ক হতে পারে।
অনলাইন কম্পালশন: গেমিং, গ্যাম্বলিং, স্টক ট্রেডিং, অনলাইন শপিং ইত্যাদি এডিকশন হতে পারে।
ইনফরমেশন ওভারলোড: বেশী বেশী ওয়েব সার্ফিং, ভিডিও দেখা, গুগলে বেশী বেশী যাওয়া, বিভিন্ন অহেতুক জিনিস সার্চ করা, ইত্যাদি হতে পারে। যা বাস্তব হবি থেকে ভার্চুয়াল হবিতে পরিণত হয়, যেটা এ্যলার্মিংও বটে! আর এটির ফলাফল বিপদজনক!
অতিমাত্রায় স্মার্ট ফোন ব্যবহারের ফলে আমাদের বাস্তব জগতের লোনলিনেস ও ডিপ্রেশন বেড়ে যেতে পারে। এনজাইটি, ওরিডনেস, স্ট্রেস বা মানসিক চাপ, কনসেনট্রেট করার ক্ষমতা ও সৃজনশীলতা নষ্ট হওয়া, ঘুমের ব্যাহত হওয়া, বিভিন্ন ধরণের সেল্ফ অবজারভেশন যার জন্য নেগেটিভ পারসোনালিটি, আত্মকেন্দ্রিকতা, রেস্টলেস অবস্থা, অতিরিক্ত রাগ, বিরক্তি, মনোযোগের অভাব, নারসিসিজম ইত্যাদি হতে পারে।
এখন আসি কি ভাবে নিজেকে ঠিক করবেন!
বাস্তবিক ভাবে সামাজিক হোন, সামাজিকতা রক্ষা করুন! কারণ মানুষ মাত্রই সামাজিক জীব। মনের জোর বাড়ান। প্রকৃত বন্ধু বাড়ান। যদি আগে কখনও কোন ড্রাগ এডিকশনের হিস্ট্রী থাকে, সেটির চিকিৎসা করান। পরিবারের সাথে থাকুন সবসময়। ছোট বেলাকার হবিগুলোকে নেড়েচেড়ে দেখুন।
কাউন্সেলিং, বিহেভিওরাল থ্যেরাপী নিন। অন্যদের কাছে বিশেষ করে শিশুদের রোল মডেল হওয়ার চেষ্টা করুন। ফোন ফ্রি জোন তৈরী করুন। অন্যকে ভাল কাজের জন্য উৎসাহিত করুন। বাচ্চার সাথে মিশুন ও কথা বলুন প্রাণভরে।
আপনার হতাশা, বিষণ্ণতা, দুঃখ-কষ্ট থাকতেই পারে। এটি জীবনের অংশ। তাই বলে এটি দূর করার বদলে আরেকটি অন্ধকারে নিমজ্জিত হওয়া কারোরই কাম্য নয়! মনে রাখবেন যেকোন এডিকশনেরই শুধুমাত্র বাহানার প্রয়োজন হয়! সো আর বাহানাও নয়, এডিকশনও নয়! নিজে সুস্থভাবে জীবন যাপন করুন ও পরিবারের সবার সুস্থতা নিশ্চত করুন! 

শিশু পড়তে চায় না এক ধরনের রোগের কারণে!



আপনি জেনে অবাক হবেন, অনেক শিশুই পড়তে চায় না এক ধরনের রোগের কারণে!
অনেক অভিভাবকই তাদের সন্তানটিকে নিয়ে বেশ দুঃশচিন্তায় ভূগে থাকেন! প্রায়ই তারা তাদের সন্তানটিকে নিয়ে অভিযোগ করেন, বকাঝকা করেন! সন্তানটিকে হতাশ করে দেয়ার সাথে সাথে নিজেরাও হতাশ হয়ে পড়েন! পরিনামে সেই বাচ্চাটির স্কুল এবং পড়াশুনায় এক ধরনের ভীতি সৃষ্টি হয়! একটা সময় লেখাপড়ায় ড্রপ আউটের খাতায় নাম লেখা হয়ে যায়!
আমাদের দেশে অনেক শিশুই এ ধরনের রোগে ভুগে থাকে! অদ্ভুত এ রোগটির নাম "ডিসলেক্সিয়া"!!
মজার বিষয় হল, এ রোগের চিকিৎসায় কোন ওষুধের প্রয়োজন নেই! তবে এটি নির্ণয় করাটা একটু কঠিন বৈকি! এখন আসি, ডিসলেক্সিয়া আসলে কি? ওয়ার্ল্ড ফেডারেশন অব নিওরোলজিস্টের মতে, এটি শিশুদের একটি সমস্যা। এখানে শিশুদের বুদ্ধিমত্তা ঠিক থাকা স্বত্ত্বেও তারা কোন কিছু লেখা বা পড়ায় সমবয়সী বা অন্য শিশুদের মত সক্ষম হয় না। ভাল শিক্ষক বা ভাল স্কুলে পড়লেও তারা পড়াশুনায় পিছিয়ে যায়! অথচ বুদ্ধির দিক দিয়ে এদের কোন ঘাটতি থাকে না! আমরা যা কিছু দেখি সেটা আমাদের ব্রেইনে গেঁথে যায়, যার জন্য আমরা অনেক কিছুই না দেখেও ইমাজিনিশানের উপর ভিত্তি করেও বলে দিতে পারি। আমরা চারপাশের জিনিস গুলিকে আলাদা ভাবে চিনতে পারি। যেমন কোন পরিচিত কন্ঠস্বর শুনে বলে দিতে পারি, কে! কিন্তু ডিসলেক্সিয়ায় আক্রান্ত শিশুরা তা পারে না। তাদের ব্রেইন এ ক্ষমতাটি হারিয়ে ফেলে! ফলে বর্ণমালার অক্ষরগুলিকে ঠিকভাবে চিনতে পারে না, বা উল্টা পাল্টা দেখে। এমনকি অনেক চেষ্টা করেও টিচারের লেকচার বুঝতে পারে না। যার কারণে এরা লেখাপড়ায় পিছিয়ে যায়! একসময় পরিবার থেকে শুরু করে শিক্ষকদের রোষানলে পড়ে এবং তারা নিজেদের প্রতি আস্থা হারিয়ে ফেলে! যেহেতু তারা সঠিক সময়ে চিকিৎসা বা দিক নির্দেশনা পায় না, তাই তারা বড় হয়ে বিষন্নতা, হতাশায় ভোগে। এদের মধ্যে প্রচন্ড স্কুল ভীতি কাজ করে। এদের কোন চোখের, কানের বা মানসিক বিকার গ্রস্থতা থাকে না।
এখন আসা যাক ডিসলেক্সিয়ার কারনটা বা ধরনটা কি ধরনের হতে পারে সে ব্যাপারে!
আঘাতজনিত ডিসলেক্সিয়াঃ আমাদের ব্রেইনে একটা স্থান থাকে যা কিনা কোন কিছু শেখা বা পড়ালেখাকে কন্ট্রোল করে। শিশুর জন্মের সময় ব্রেইনের ওই স্থানে আঘাত পেলে অনেক সময় এটি হতে পারে! তবে আধুনিক যুগে এ কারণটা খুবই কম দেখা যায়।
প্রাথমিক ডিসলে্ক্সিয়াঃ এ ক্ষেত্র ব্রেইনের বাম দিকটা কোন কারন ছাড়াই কোন কাজ করেনা। বয়স বাড়লেও এটি কাজ করেনা। ফলে বড় হলেও এরা লিখতে, পড়তে পারেনা। এবং বংশ পরম্পরায় এটি ছড়িয়ে পড়ে!
সেকেন্ডারী ডিসলেক্সিয়াঃ শিশু গর্ভে থাকা অবস্থায় হরমোন গত কারণে এ রোগটি হতে পারে। তবে বয়স বাড়ার সাথে সাথে এ সমস্যাটি ভাল হয়ে যায়।
এখন আসি আপনি কি ভাবে বুঝবেন আপনার সন্তানের এ রোগটির কথা!
বইয়ের পাতার অক্ষর গুলি শিশু সাধারণতঃ উল্টা পাল্টা দেখে। ৭/৮ বছর বয়স পর্যন্ত তার এ সমস্যা থাকতে পারে। তারা স্কুলের বোর্ডে দেখে দেখে খাতায় লিখতে অসুবিধা বোধ করে। তারা তাদের পছন্দের গল্পটিও বলতে পারার ক্ষমতা হারায়। কোন কিছুর সাথে এরা তাল মেলাতে পারেনা। এমনকি মিউজিকের সাথেও! এরা ২ হাতেই শক্তি প্রয়োগ করে থাকে। কোন কিছু শুনে মনে রাখতে পারেনা। কয়েকটি বাক্য বলার সময় মাঝের কিছু বাক্য তারা হারিয়ে ফেলে। এভাবে আস্তে আস্তে তারা বিষন্ন হয়ে পড়ে এবং স্কুল তাদের কাছে একটি ভীতিকর ব্যপার হয়ে পড়ে।
মা-বাবার করণীয়ঃ শিশুর এ সমস্যা দুর করতে মা-বাবাকেই প্রধান ভূমিকা পালন করতে হয়। প্রয়োজনে শিশুর ক্লাস টিচারের সাথে কথা বলুন। শিশুকে কোন গালমন্দ, বা মারধোর করবেন না। প্রাইভেট টিউটরের বদলে তার প্রতি ভালবাসা, সহমর্মিতা বাড়িয়ে দিন। প্রয়োজনে কোন ভাল সাইকোলজিস্ট এর কাছে নিয়ে যান! এদেরকে কম, কম পড়তে দিতে হবে। হোমওয়ার্ক একটানা না করিয়ে কিছু বিরতি দিয়ে করানো যেতে পারে! ক্লাসের সময়ও বিরতি দিয়ে ক্লাস নেয়া যেতে পারে! সম্ভব হলে কম্পিউটারে ছবির মাধ্যমে পড়ানো যেতে পারে। যাতে সে আনন্দ পায়!
মনে রাখবেন, জীবনের জন্য লেখাপড়া, লেখাপড়ার জন্য জীবন নয়! আপনার শিশুকে চমৎকার একটা জীবন শুধুমাত্র আপনিই পারেন উপহার দিতে! 

বাই পোলার মুড ডিসঅর্ডার



অনেকে হঠাৎ করে অযথা নিজেকে খুব বড় মাপের ভাবতে শুরু করেন! আবার কেউ কেউ নিজেকে নিজের যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও খুবই ছোট, তুচ্ছ ভাবেন! এটি এক ধরণের কমপ্লেক্স। ব্যক্তির ভেতর দুই ধরণের কমপ্লেক্সিটি তখনই কাজ করে, যখন তিনি স্বাভাবিক মানুষের মত স্বাভাবিক থাকতে পারেন না! এবং আচরণের ভারসাম্যও বজায় রাখতে পারেন না। নিজের কনফিডেন্স লেভেল কমে যাওয়ার বা অতিরিক্ত বেড়ে যাওয়ার বিভিন্ন ধরণের কারণ রয়েছে! যেমনঃ শিশুকালীন সময়ে নিরানন্দময় বাড়ীর পরিবেশ, বিভিন্ন ধরনের ট্রমা বা শক! বাড়ীতে বাবা, মায়ের এবং পারিবারিক অশান্তি, একজনের সাথে আরেক জনের তুলনা-সমালোচনা, ওভার-প্রটেকটেড বা রিজেকটেড সন্তান ইত্যাদির জন্য প্রধানতঃ কমপ্লেক্সের জন্ম! অনেক সময়, এই কমপ্লেক্স থেকে মুডও ওঠানামা করে! অনেকে আবার আদর করে বলেন, "ও খুব মুডি"! এই মুড যখন নিজের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়, আপনি জেনে অবাক হবেন যে এটির সাথে এক ধরণের আবেগজনিত মানসিক রোগের নাম ও বৈশিষ্ট্য জড়িয়ে আছে! এ রোগটির নাম "বাই পোলার মুড ডিসঅর্ডার"!
যদি কখনও কাউকে খুব উচ্ছ্বসিত, আবার একটু পরেই, অন্য সময় খুবই বিরক্ত হতে দেখা যায় অর্থাৎ, তাঁর মুডটা খুব তাড়াতাড়ি ওঠানামা করে এবং সেই সাথে নির্দিষ্ট কিছু বৈশিষ্ট্য বহন করেন, তখনই বুঝতে হবে ব্যক্তিটি "বাইপোলার মুড ডিসঅর্ডার" নামক রোগের সাথে হেঁটে চলেছেন।
এটিতে আক্রান্ত ব্যক্তির আবেগের দুটি পর্যায় থাকে। একটি হলো ম্যানিয়া বা হাইপো ম্যানিয়া। অন্য আরেকটি পর্যায় হল ডিপ্রেশন বা বিষন্নতা। বাইপোলার ডিসঅর্ডার অনেক সময় বংশগত কারণেও হয়। যাদের নিকটাত্মীয়ের এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার ইতিহাস আছে, তাঁদের এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশী। মানসিক স্বাস্থ্য ইন্সটিটিউটের গবেষণায় দেখা যায়, বাংলাদেশে ১৮ বছর বা তদুর্ধ বয়সীদের শতকরা ০.৪ জন, অর্থাৎ প্রতি হাজারে ৪ জন এ ধরণের রোগে আক্রান্ত!!
ম্যানিয়া পর্যায়ের ব্যক্তিরা নিজেকে খুবই ক্ষমতাবান, টাকা পয়সার মালিক মনে করেন। অত্যাধিক আনন্দ ফুর্তির সাথে আবার বিরক্তও বোধ করেন। অতিরিক্ত কথা, মানে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশী কথা বলেন, অতিরিক্ত উত্তেজনা, আবার অতিরিক্ত কাজের স্পৃহাও দেখা যায়! কোন নির্দিষ্ট সিদ্ধান্তে স্থির থাকতে পারেন না। কোন নির্দিষ্ট বিষয়ে বেশীক্ষণ মনোযোগও ধরে রাখতে পারেন না! বেশী খরচ বা দান করেন, ঘুম কমে যায়, অনেকের সেক্সের ব্যপারে আগ্রহ বেড়ে যায়। এ সব উপসর্গ টানা সাত দিনের বেশী থাকলে একে ম্যানিয়া বলা হয়! উপসর্গের তীব্রতা ও স্থায়ীত্ব কম হলে একে হাইপো ম্যানিয়া বলে।
অনেকের ক্ষেত্রে শুধু ম্যনিয়া পর্যায়টিই দৃশ্যমান হয়। আবার কারো কারো ক্ষেত্রে এ পর্যায়টি সারা জীবনে ২/১ বারও দেখা দিতে পারে। কারো কারো ক্ষেত্রে বছরে নির্দিষ্ট সময়ে হতে পার, আবার কয়েক বছর পর পরও হতে পারে। রোগের তীব্রতা বেশী হলে চিকিৎসকের নিকট চিকিৎসা নিতে হবে। যে কোন পেশার, যে কোন শ্রেণীর মানুষই এ রোগে আক্রান্ত হতে পারে। কেউ কেউ বলেন, এ রোগের রোগীরা খুবই মেধাসম্পন্ন হয়ে থাকেন। যদিও এর কোন যুক্তি নেই। রোগ নিয়ন্ত্রণে রেখে ব্যক্তি তার বুদ্ধিমত্তা ও প্রতিভা অনুযায়ী সফলতা পেতে পারেন! রোগীর অবস্থানুযায়ী তার জন্য বাস্তবভিত্তিক ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করা যেতে পারে।
বাই পোলার মুড ডিসঅর্ডার যেহেতু একটি আবেগজনিত মানসিক রোগ, তাই এটির জন্য নিয়মিত মেডিসিন এবং কাউন্সেলিং এর প্রয়োজন। শরীরের ব্যাধিতে যেমন দরকার চিকিৎসার, ঠিক এটির ক্ষেত্রেও দরকার মনোচিকিৎসার!
সুতরাং মনের পরিচর্যা করুন, নিজেকে সুস্থ ও সুন্দর রাখুন এবং ভাল থাকুন ! 

মাদকাসক্তি



যখন কোন ব্যক্তি তার ভালো লাগার জন্য এক বা একাধিক দ্রব্য বারবার গ্রহণ করেন ও ঐ নির্দিষ্ট দ্রব্যের ওপর সচেতন ও অবচেতন উভয়ভাবেই নির্ভরশীল হয়ে পড়েন, এবং ধীরে ধীরে ওই দ্রব্য নেয়ার পরিমান বাড়তে থাকে তাকেই আমরা আসক্তি বলে থাকি। অতিরিক্ত কোন জিনিসই গ্রহণযোগ্যতা লাভ করতে পারে না! আসক্তি অনেক ধরণেরই হতে পারে। যেমনঃ মাদকাসক্তি, ইন্টারনেট আসক্তি, যৌন আসক্তি, ইত্যাদি।
বাংলাদেশে ব্যবহৃত মাদকাসক্তির ভেতর বিভিন্ন ধরণের ঘুমের ওষুধ, যেমন সিডাক্সিন, হিপনোফাস্ট; কাশির ওষুধ ফেন্সিডিল, তুসকা; হেরোইন, প্যথেড্রিন, ক্যনবিয বা গাঁজা, সীশা, ইয়াবা, কোকেইন, যে কোন অ্যালকোহল, আ্যমফিটামিন বা গুল, ইত্যাদি সবসময় চলতে থাকে। তবে বেশীর ভাগ মাদকাসক্তই একের অধিক মাদক দ্রব্য গ্রহণ করে থাকেন!
মাদকাসক্তির অনেক কারণের ভিতর কয়েকটি কারণ না বললেই নয়! মাদকদ্রব্যের সহজলভ্যতা, সেই ব্যক্তির নাজুক ব্যক্তিত্ব ও বিভিন্ন আর্থ-সামাজিক কারণ উল্লেখযোগ্য।
মাদকাসক্তির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ভয়াবহ। এগুলি গ্রহণের ফলে ব্যক্তির দীর্ঘমেয়াদী পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায়। যেমনঃ অস্বাভাবিক আচরণ, অস্বাভাবিক কথাবার্তা, লিভার সিরোসিস, মানসিক রোগ, স্মরণশক্তি ও ইচ্ছাশক্তি লোপ, যৌন অক্ষমতা, আলসার, এসিডিটি, চর্মরোগ, ইত্যাদি।
মাদকে নির্ভরতায় অনেক আবেগগত, পারিবারিক ও সামাজিক উপর্সগ তৈরী হয়!
যেমন, আবেগগত উপর্সগগুলি হচ্ছেঃ হঠাৎ করে মুডের পরিবর্তন, উদ্বিগ্নতা, দুশ্চিন্তা, বিষণ্ণতা, ম্যানিয়া, সিজোফ্রেনিয়া, দায়িত্বজ্ঞানহীনতা, মাত্রাধিক্য, কল্পনাবিলাসিতা, ফোবিয়া ইত্যাদী।
পারিবারিক উপসর্গঃ পরিবারের সদস্যদের সাথে খারাপ ব্যবহার করা, একটানা ঝগড়া বিবাদ করা, বাবা মাকে টাকা পয়সার জন্য চাপ দেয়া, কাউকে মান্য না করা, হুমকি দেয়া, পারিবারিক কোন কাজ কর্মে অংশ না নেয়া, আইন ভংগ করা।
সামাজিক উপসর্গঃ সমাজ থেকে বিচ্ছিন্নভাবে বসবাস করা, যেখানে কোন সামাজিক বন্ধনেই তাকে নিয়ন্ত্রণ করা যায় না। অনেক সময় লেখাপড়া করতে না চাওয়া, সহপাঠীদের সাথে খারাপ ব্যবহার করা, স্কুল-কলেজ থেকে পালানো।
এখন আসি কিভাবে এসব প্রতিরোধ করা যায়!
সাধারনতঃ মাদকাসক্ত রোগীর চিকিৎসা তিন ভাবে করা সম্ভব।
প্রথমতঃ চিকিৎসার মাধ্যমে রোগীর শরীর থেকে মাদকাসক্তির ভাবটা তুলে নেয়া হয়! অর্থাৎ উইথড্রয়াল মেথডে যেতে হয়! এটিতে সময় লাগে ৭ দিন থেকে ১ মাস! এটি বাড়ীতে করা সম্ভব নয়! কোন হাসপাতাল বা রিহ্যবে রাখতে হয়! কারণ এই সময়ে রোগীর খিঁচুনী সহ শরীরে অনেক ধরণের সমস্যা হতে পারে; জ্বর, নাক দিয়ে পানি পড়া, প্রচন্ড মেজাজ খারাপ, শরীরে ব্যথা, ঘুম না হওয়া অনেক কিছুই হয়! তখন ডাক্তার সেই অনুযায়ী রোগীকে দেখাশুনা করেন!
দ্বিতীয় ভাগে তাকে সামাজিকভাবে পুনর্বাসন করা হয়! যেমন রোগীকে অন্যের সাথে মেশা, বিভিন্ন কর্মকান্ডে যেমন খেলাধুলায় অংশ গ্রহণ করানো ও এক্সারসাইজ দেয়া হয়। এখানে সময়টা একটু বেশী লাগে!
তৃতীয় ভাগে বিভিন্ন ধরণের সাইকোথেরাপী বা কাউন্সেলিং দেয়া হয়!
তবে মনে রাখতে হবে প্রথম ৩-৬ মাসের ভেতরে ব্যক্তির পুনরায় মাদক গ্রহণের জন্য এক ধরনের টান উঠতে পারে! কেননা, ব্লাড থেকে মাদক পুরোপুরি নিঃশেষ হতে মিনিমাম তিন মাস সময় লাগে!
এছাড়া রোগীর বাড়ীর সদস্যদেরকেও রোগীর সাথে কিভাবে ব্যবহার করতে হবে সেটিও বুঝিয়ে দেয়া হয়। রোগীর পুরানো এনভায়রনমেন্ট চেইঞ্জ করাসহ যেসব বন্ধুদের সাথে মাদক নিত তাদেরকে পরিত্যাগ করতে হবে!
এভাবে ধীরে ধীরে ব্যক্তি স্বাভাবিক আচরণ করতে শুরু করেন এবং সুস্থ হয়ে ওঠেন।
মাদকাসক্তদের দূরে সরিয়ে দিয়ে ঘৃণা করা নয়, তাদেরকে স্নেহ, ভালবাসা, নিরাপত্তা দিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হয়। কারণ তারাও তো আমার আপনার মতই মানুষ, আমাদের কারো না কারো আপনজন।
আর তা ছাড়া মানুষ তো মানুষেরই জন্য!