যখন কোন ব্যক্তি তার ভালো লাগার জন্য এক বা একাধিক দ্রব্য বারবার গ্রহণ করেন ও ঐ নির্দিষ্ট দ্রব্যের ওপর সচেতন ও অবচেতন উভয়ভাবেই নির্ভরশীল হয়ে পড়েন, এবং ধীরে ধীরে ওই দ্রব্য নেয়ার পরিমান বাড়তে থাকে তাকেই আমরা আসক্তি বলে থাকি। অতিরিক্ত কোন জিনিসই গ্রহণযোগ্যতা লাভ করতে পারে না! আসক্তি অনেক ধরণেরই হতে পারে। যেমনঃ মাদকাসক্তি, ইন্টারনেট আসক্তি, যৌন আসক্তি, ইত্যাদি।
বাংলাদেশে ব্যবহৃত মাদকাসক্তির ভেতর বিভিন্ন ধরণের ঘুমের ওষুধ, যেমন সিডাক্সিন, হিপনোফাস্ট; কাশির ওষুধ ফেন্সিডিল, তুসকা; হেরোইন, প্যথেড্রিন, ক্যনবিয বা গাঁজা, সীশা, ইয়াবা, কোকেইন, যে কোন অ্যালকোহল, আ্যমফিটামিন বা গুল, ইত্যাদি সবসময় চলতে থাকে। তবে বেশীর ভাগ মাদকাসক্তই একের অধিক মাদক দ্রব্য গ্রহণ করে থাকেন!
মাদকাসক্তির অনেক কারণের ভিতর কয়েকটি কারণ না বললেই নয়! মাদকদ্রব্যের সহজলভ্যতা, সেই ব্যক্তির নাজুক ব্যক্তিত্ব ও বিভিন্ন আর্থ-সামাজিক কারণ উল্লেখযোগ্য।
মাদকাসক্তির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ভয়াবহ। এগুলি গ্রহণের ফলে ব্যক্তির দীর্ঘমেয়াদী পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায়। যেমনঃ অস্বাভাবিক আচরণ, অস্বাভাবিক কথাবার্তা, লিভার সিরোসিস, মানসিক রোগ, স্মরণশক্তি ও ইচ্ছাশক্তি লোপ, যৌন অক্ষমতা, আলসার, এসিডিটি, চর্মরোগ, ইত্যাদি।
মাদকাসক্তির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ভয়াবহ। এগুলি গ্রহণের ফলে ব্যক্তির দীর্ঘমেয়াদী পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায়। যেমনঃ অস্বাভাবিক আচরণ, অস্বাভাবিক কথাবার্তা, লিভার সিরোসিস, মানসিক রোগ, স্মরণশক্তি ও ইচ্ছাশক্তি লোপ, যৌন অক্ষমতা, আলসার, এসিডিটি, চর্মরোগ, ইত্যাদি।
মাদকে নির্ভরতায় অনেক আবেগগত, পারিবারিক ও সামাজিক উপর্সগ তৈরী হয়!
যেমন, আবেগগত উপর্সগগুলি হচ্ছেঃ হঠাৎ করে মুডের পরিবর্তন, উদ্বিগ্নতা, দুশ্চিন্তা, বিষণ্ণতা, ম্যানিয়া, সিজোফ্রেনিয়া, দায়িত্বজ্ঞানহীনতা, মাত্রাধিক্য, কল্পনাবিলাসিতা, ফোবিয়া ইত্যাদী।
পারিবারিক উপসর্গঃ পরিবারের সদস্যদের সাথে খারাপ ব্যবহার করা, একটানা ঝগড়া বিবাদ করা, বাবা মাকে টাকা পয়সার জন্য চাপ দেয়া, কাউকে মান্য না করা, হুমকি দেয়া, পারিবারিক কোন কাজ কর্মে অংশ না নেয়া, আইন ভংগ করা।
সামাজিক উপসর্গঃ সমাজ থেকে বিচ্ছিন্নভাবে বসবাস করা, যেখানে কোন সামাজিক বন্ধনেই তাকে নিয়ন্ত্রণ করা যায় না। অনেক সময় লেখাপড়া করতে না চাওয়া, সহপাঠীদের সাথে খারাপ ব্যবহার করা, স্কুল-কলেজ থেকে পালানো।
এখন আসি কিভাবে এসব প্রতিরোধ করা যায়!
সাধারনতঃ মাদকাসক্ত রোগীর চিকিৎসা তিন ভাবে করা সম্ভব।
সাধারনতঃ মাদকাসক্ত রোগীর চিকিৎসা তিন ভাবে করা সম্ভব।
প্রথমতঃ চিকিৎসার মাধ্যমে রোগীর শরীর থেকে মাদকাসক্তির ভাবটা তুলে নেয়া হয়! অর্থাৎ উইথড্রয়াল মেথডে যেতে হয়! এটিতে সময় লাগে ৭ দিন থেকে ১ মাস! এটি বাড়ীতে করা সম্ভব নয়! কোন হাসপাতাল বা রিহ্যবে রাখতে হয়! কারণ এই সময়ে রোগীর খিঁচুনী সহ শরীরে অনেক ধরণের সমস্যা হতে পারে; জ্বর, নাক দিয়ে পানি পড়া, প্রচন্ড মেজাজ খারাপ, শরীরে ব্যথা, ঘুম না হওয়া অনেক কিছুই হয়! তখন ডাক্তার সেই অনুযায়ী রোগীকে দেখাশুনা করেন!
দ্বিতীয় ভাগে তাকে সামাজিকভাবে পুনর্বাসন করা হয়! যেমন রোগীকে অন্যের সাথে মেশা, বিভিন্ন কর্মকান্ডে যেমন খেলাধুলায় অংশ গ্রহণ করানো ও এক্সারসাইজ দেয়া হয়। এখানে সময়টা একটু বেশী লাগে!
তৃতীয় ভাগে বিভিন্ন ধরণের সাইকোথেরাপী বা কাউন্সেলিং দেয়া হয়!
তবে মনে রাখতে হবে প্রথম ৩-৬ মাসের ভেতরে ব্যক্তির পুনরায় মাদক গ্রহণের জন্য এক ধরনের টান উঠতে পারে! কেননা, ব্লাড থেকে মাদক পুরোপুরি নিঃশেষ হতে মিনিমাম তিন মাস সময় লাগে!
এছাড়া রোগীর বাড়ীর সদস্যদেরকেও রোগীর সাথে কিভাবে ব্যবহার করতে হবে সেটিও বুঝিয়ে দেয়া হয়। রোগীর পুরানো এনভায়রনমেন্ট চেইঞ্জ করাসহ যেসব বন্ধুদের সাথে মাদক নিত তাদেরকে পরিত্যাগ করতে হবে!
এভাবে ধীরে ধীরে ব্যক্তি স্বাভাবিক আচরণ করতে শুরু করেন এবং সুস্থ হয়ে ওঠেন।
এছাড়া রোগীর বাড়ীর সদস্যদেরকেও রোগীর সাথে কিভাবে ব্যবহার করতে হবে সেটিও বুঝিয়ে দেয়া হয়। রোগীর পুরানো এনভায়রনমেন্ট চেইঞ্জ করাসহ যেসব বন্ধুদের সাথে মাদক নিত তাদেরকে পরিত্যাগ করতে হবে!
এভাবে ধীরে ধীরে ব্যক্তি স্বাভাবিক আচরণ করতে শুরু করেন এবং সুস্থ হয়ে ওঠেন।
মাদকাসক্তদের দূরে সরিয়ে দিয়ে ঘৃণা করা নয়, তাদেরকে স্নেহ, ভালবাসা, নিরাপত্তা দিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হয়। কারণ তারাও তো আমার আপনার মতই মানুষ, আমাদের কারো না কারো আপনজন।
আর তা ছাড়া মানুষ তো মানুষেরই জন্য!
আর তা ছাড়া মানুষ তো মানুষেরই জন্য!
No comments:
Post a Comment